সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি ►
নীলফামারীর সৈয়দপুরে সিটি ব্যাংকের একজন গ্রাহকের এফডিআরকৃত ৩৪ লাখ টাকার হদিস নেই। কর্মকর্তারা গোপনে এই টাকা প্রায় ২ বছর আগেই তুলে তসরুপ করেছে। বিশেষ প্রয়োজনে গ্রাহক টাকার জন্য বাংকে গেলে বিষয়টা জানতে পারেন। এই জালিয়াতিতে জড়িত এক কর্মকর্তাকে পাকরাও করে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) রাত ৯ টা পর্যন্ত ব্যাংকের ম্যানেজারের চেম্বারে অবরুদ্ধ করে রাখে ভুক্তভোগী গ্রাহক ও তার স্বজনরা। নানা টালবাহানা শেষে পরে ম্যানেজার টাকা ফেরত দেয়ার দায়িত্ব নেয়ার প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
জানা যায়, সৈয়দপুর শহরের হাতিখানা মহল্লার বিশিষ্ট চাউল ব্যবসায়ী মৃত ইদ্রিস আলীর মেয়ে শরীফা বেগম সিটি ব্যাংকে ৩৩০ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রিসিট (এফডিআর) অর্থাৎ মেয়াদী সঞ্চয় হিসাব খুলেছিলেন। নিজের গহনা বিক্রি করে গত ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর এই এফডিআর করেন তিনি।
বর্তমানে যা ৩৩ লাখ ২৬ হাজার ৩৩৯ টাকায় দাঁড়িয়েছে। যার হিসাব নং ২২২৩১৫১২০৭০০১। মেয়াদ শেষ না হলেও বিশেষ প্রয়োজনে এফডিআর ভেঙে টাকা তুলতে গিয়ে জানতে পারেন তাঁর এফডিআর দূরের কথা একাউন্টে কোন টাকাই নাই এফডিআর করার মাত্র এক মাসের মধ্যেই তা ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ফলে তিনি ব্যাংকের যে কর্মকর্তার মাধ্যমে এফডিআর করেছিলেন তাকে ধরেন। ব্যাংকের ঋণ শাখার দায়িত্বরত অফিসার ইসতেকুর ইসলাম সেতু প্রথমে অস্বীকার করে এবং সঠিক তথ্য দিতে গড়িমসি করতে থাকে। বাধ্য হয়ে বিষয়টা আত্মীয়-স্বজন ও সাংবাদিকদের জানান। এতে সেতু গা ঢাকা দেয়। বৃহস্পতিবার গোপনে সৈয়দপুর শহরের কাজীপাড়াস্থ ভাড়া বাসা থেকে জিনিসপত্র নিয়ে সটকে পড়াকালে তাকে পাকড়াও করে ব্যাংকে আনা হয়।
এবিষয়ে সেতুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ভুল করেছি। এতে ব্যাংকের কোন ত্রুটি নেই। আমিই টাকাটা কৌশলে সরিয়েছি। কিন্তু গ্রাহকের অজ্ঞাতে এবং এককভাবে এটা কিভাবে করা সম্ভব প্রশ্ন করলে তিনি নিরবতা পালন করেন। পরে জানান, মুলতঃ আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কয়েকজন মিলেই এই অপকর্ম করলেও দায় আমার ঘাড়েই চেপেছে। যে মূল খলনায়ক সে ইতোমধ্যে চাকুরীচ্যুত। কিন্তু তার আর বলতে চাইনা।
ব্যাংক ম্যানেজার সুলতান মাহবুব বলেন, এবিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আজ এইমাত্র আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। আমি মাত্র ১০ মাস হলো এই শাখায় এসেছি। আর এফডিআর করা হয়েছে ২০২২ সালে। তখনকার ম্যানেজার রেজোয়ান করিম ও সেতুই ভালো বলতে পারবে। তবে গ্রাহককে সার্বিক সহযোগীতা করা হচ্ছে তাঁর টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে।
একটি সূত্রমতে, এধরনের আর অনেকের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটেছে। যার বেশিরভাগই মহিলা গ্রাহক। সংঘবদ্ধ ভাবেই এই কাজ করা হয়েছে। বর্তমান ম্যানেজারও এর দায় এড়াতে পারেনা। কেননা তিনি দায়িত্ব নেয়ার সময় এসংক্রান্ত হিসেব নিশ্চয়ই পাই টু পাই বুঝে নিয়েছেন।,সেখানে কি এই জালিয়াতি তার দৃষ্টি গোচর হয়নি? এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ায় গ্রাহকসহ সাধারণ সৈয়দপুরবাসীর মাজে চাঞ্চল্য ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।